অনেকেই মনে করেন মাথা ব্যথায় চা বা কফি ভালো কাজ করে, এটা ভুল ধারণা, নিয়মিত এ অভ্যাস মাইগ্রেনের ব্যথাকে জটিল করে তুলতে পারে।
অনেকেই মনে করেন মাথা ব্যথায় চা বা কফি ভালো কাজ করে, এটা ভুল ধারণা, নিয়মিত এ অভ্যাস মাইগ্রেনের ব্যথাকে জটিল করে তুলতে পারে।
মাইগ্রেন কোনো সাধারণ মাথা ব্যথা নয়, এটি এক ধরণের নিউরোলজিক্যাল সমস্যা। তীব্র মাথা ব্যাথার সঙ্গে সঙ্গে বমি বমি ভাব, চোখে ব্যথা এমনকী মুখ ও চোয়ালেও ব্যথা হতে পারে। ক্রমাগত দুশ্চিন্তা, টেনশন থেকে মাইগ্রেনের শিকার হন অনেকে। মাইগ্রেন মূলত ‘জেনেটিক’। আরও বিভিন্ন কারণে মাইগ্রেন হতে পারে। আবহাওয়া বদলের জন্যেও এই রোগ হতে পারে। মস্তিষ্কে বিভিন্ন রাসায়নিকের পরিমাণ ওঠানামাও এই রোগের জন্য দায়ী। বিভিন্ন উদ্দীপনা এক স্নায়ু থেকে অন্য স্নায়ুতে পৌঁছতে এই রাসায়নিকগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হলে মাইগ্রেন হতে পারে।
মাইগ্রেনের মাথাব্যথার কারণ:
* মানসিক চিন্তা, অতিরিক্ত কাজের চাপ, ঘুমের ব্যঘাত, অবসাদ ইত্যাদি মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ হতে পারে।
* মাইগ্রেনের ব্যথা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়৷ মহিলাদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে বা কমে গেলে ধাতুস্রাবের সময় মহিলাদের এই ব্যথা অনুভূত হয়।
* অনেকের ক্ষেত্রে রক্তচাপ সঠিক পরিমাণে না হলে মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে মাইগ্রেন জিন থেকেও এই ব্যথা হতে পারে।
যেসব খাবার মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে:
* ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার। যেমন ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক।
* বিভিন্ন ফল, বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে।
* সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খেলে উপকার হয়।
* ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তিল, আটা ও বিট ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে:
* চা, কফি ও কোমলপানীয়, চকলেট, আইসক্রিম, দই, দুধ, মাখন, টমেটো ও টক জাতীয় ফল এড়িয়ে চলতে হবে। অনেকেই মনে করেন মাথা ব্যথায় চা বা কফি ভালো কাজ করে, এটা ভুল ধারণা, নিয়মিত এ অভ্যাস মাইগ্রেনের ব্যথাকে জটিল করে তুলতে পারে।
* গম জাতীয় খাবার, যেমন রুটি, পাস্তা, ব্রেড ইত্যাদি
* আপেল, কলা ও চিনাবাদাম
* পেঁয়াজ
তবে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে ব্যথা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু উপায়:
* মাইগ্রেন চিকিৎসায় তাৎক্ষণিক এবং প্রতিরোধক ওষুধের পাশাপাশি কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।
* প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত।
* অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।
* কড়া রোদ বা তীব্র ঠান্ডা পরিহার করতে হবে।
* উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।
* বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।
* মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা (বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে), বিশ্রাম করা, ঠান্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত।