ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: ফাইল ফটো
সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসব সামাজিক রোগ দেশের উন্নয়ন নষ্ট করে দেয়।
তিনি বলেছেন, ‘ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে যা আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রমকে নষ্ট করে দেয়। এ ক্ষেত্রে আপনাদেরকে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে ১১৩তম, ১১৪তম এবং ১১৫তম আইন ও প্রশাসনে কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী দেশের পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তাদের জনগণের অর্থ সঠিকভাবে ব্যয়ের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি আপনাদের বিশেষ দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি, যাতে আমরা জনসাধারণের অর্থ ব্যয় করে আরও বেশি উন্নয়ন কাজ করতে পারি।’
মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদি কোনো কর্মকর্তা ইচ্ছা করেন, তবে তিনি সেখানে উন্নয়ন দৃশ্যমান করে কোনো কোনো জেলা, উপজেলা বা ইউনিয়নের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দিতে পারেন।’
‘আপনাদের কাছে এ জাতীয় উদ্ভাবনী ধারণা, পরিকল্পনা এবং চিন্তাভাবনা থাকতে হবে (এটি করার জন্য),’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী, মাদক, সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের দিকেও সরকারি কর্মকর্তাদের বিশেষ মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি আজকে প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি। আমি নিজেকে ঠিক ওই প্রধানমন্ত্রী মনে করি না। জাতির পিতার কন্যা হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করি। মন্ত্রিত্ব পাওয়া, প্রধানমন্ত্রিত্ব পাওয়ার অনেক সহজ পথও থাকে, কিন্তু সে পথ কখনও অনুসরণ করি না। যেটা আমার বাবাও করেননি।’
স্বনির্ভর হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষুদ্রঋণের ধারণা এবং জাতিসংঘে এ বিষয়ে রেজ্যুলেশন আনার জন্য আমাদের সরকারই কাজ করেছে। তবে সেই সুবিধা নিয়ে নোবেল প্রাইজ পাওয়া একজন ব্যক্তি একটি ব্যাংকের এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লবিংও করা হলো। দুর্নীতির অভিযোগ দেয়া হলো আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। আমার ছেলেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ডেকে অনেকবার চাপ দিয়েছে। তবে আমরা নতজানু হইনি। সততার জয় হয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগ যে মিথ্যা, তা প্রমাণিত হয়েছে। আজ বাংলাদেশ নিজের টাকায় পদ্মা সেতুর কাজ করছে। এর থেকে আমরা স্বনির্ভর হয়ে ওঠার আত্মবিশ্বাস পেয়েছি।
কর্মকর্তাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশে আজ ডিজিটাল সিস্টেমে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই মাধ্যম ব্যবহার করে আমাদের কাজ করতে হবে। আর যেন আমাদের পিছিয়ে পড়তে না হয়। বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নের রোল মডেল বলা হচ্ছে, অনেকে আমাদের উন্নয়ন ম্যাজিকের বিষয়ে জানতে চান। সবাইকে বলি, আমাদের দেশপ্রেমের কারণেই এই উন্নয়ন নিশ্চিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে পাঁচমাস মেয়াদী তিনটি কোর্স শেষে প্রশাসন ক্যাডারের ১২০ জন কর্মকর্তাকে সনদপত্র বিতরণ করেন সরকার প্রধান।
স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর কাজী রওশন আক্তার। অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন প্রশিক্ষণার্থী ফরাসউদ্দিন এনাম, তরিকুল ইসলাম ও রাহুল চন্দ্র।
সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর কাজী রওশন আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান ও জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ। সুত্র: ইউএনবি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএইচ