পেশির বলে আওয়ামী লীগের নেতা হওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের । ব
শনিবার দুপুরে নগরের লালদিঘি মাঠে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।
খারাপ লোকদের দলে না টানার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বুয়েটে আবরার হত্যাকারীর মতো কর্মী আমাদের দরকার নেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বারবার কলহ সৃষ্টিকারী কর্মী আমাদের দরকার নেই। রাজশাহীতে অধ্যক্ষকে পানিতে চুবানোর মতো কর্মী আমাদের দরকার নেই। মাস্তানি করে, গডফাদারগিরি করে নেতা হওয়া যাবে না।’
চট্টগ্রামে দলের কোন্দলের দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “চট্টগ্রামের মাটি শেখ হাসিনার ঘাঁটি। এ ঘাঁটিতে যে ফাটল ধরেছে, তা ক্লোজ করে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই, সুবিধাবাদী চাই না। মৌসুমী ও অতিথি পাখিদের স্থান আওয়ামী লীগে নেই। দল ভারী করার জন্য যে পকেট কমিটি করবে, তাদের প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, “নেতৃত্বে সুবিধাবাদীরা আসলে সে আওয়ামী লীগ টিকে থাকতে পারবে না। দুঃসময়কালে পাঁচ হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।”
এখন কর্মীর চেয়ে নেতা বেড়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বাংলাদেশ এখন নেতা উৎপাদনের কারখানা। কর্মী উৎপাদনের কারখানা কমে গেছে। ব্যানার পোস্টার লাগাতে এখন আর কর্মী পাই না। ভাড়া করা টোকাই দিয়ে লাগাতে হয়। এখন সবাই নেতা হয়ে গেছে, কর্মী কেউ নয়।
কাদের বলেন, “সবাই নেতা হতে চায়। নেতা হতে গেলে আগে কর্মী হতে হবে। যারা নেতা হতে চান সৎ জীবনযাপন করবেন। কত টাকা দরকার জীবনের জন্য। চাঁদাবাজ আওয়ামী লীগের নেতা হতে পারে না। টেন্ডারবাজ, জমি দখলকারী, সন্ত্রাসীদের না বলুন।”
ক্ষমতার দাপট দেখাতে মানা করে কাদের বলেন, “এটি আজ আছে কাল নেই। এ জনগণের মাঝেই আমাদের থাকতে হবে। আমাদের ক্ষমতার উৎস বিএনপির মতো বন্দুকের নল নয়। জনগণের সাথেই থাকতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে সাহসী রাজনীতিক অভিহিত করে মন্ত্রী কাদের বলেন, “বিশ্বের তিনজন সৎ রাজনীতিকের একজন তিনি। বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনীতিকের একজন তিনি। বাংলাদেশে ৭৫ পরবর্তী সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক তিনি, বাংলাদেশে সবচেয়ে ঝুঁকি নিয়ে যিনি জীবনযাপন করেন তিনিই হলেন শেখ হাসিনা। নেত্রীর সততা-সাহস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।”
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সন্দ্বীপের মাহফুজুর রহমান মিতা, সীতাকুণ্ডের দিদারুল আলম, নারী সংসদ সদস্য খদিতাজুল আনোয়ার সনি।
বিকালে দ্বিতীয় পর্বে সাংগঠনিক অধিবেশনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণার কথা রয়েছে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন। সভাপতিত্ব করেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মতিন খসরু, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া। উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও মফিজুর রহমান, সীতাকুণ্ডের সাংসদ দিদারুল আলম, সাংসদ খদিজাতুল আনোয়ার প্রমুখ।