News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:০৪, ১৮ অক্টোবর ২০১৯
আপডেট: ২২:৩৬, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ে প্রবালে

সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ে প্রবালে

স্বচ্ছ নীল সমুদ্র। যার কাছে এসে দাঁড়ালে একেবারে নীচ অবধি দেখা যায়। সূর্যের আলো ঠিকরে পড়লে আরও সুন্দর, আরও রহস্যময় হয়ে ওঠে। সেখানে মানুষ বাস না করলেও, আছে বিচিত্র সব প্রাণী, হরেকরকম জীব। আর তাদেরই অন্যতম ‘কোরাল' বা প্রবাল– এক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী।

বর্ণিল এই প্রাণীগুলো শুধু সারাটা জীবন নয়, মরণের পরও সংঘবদ্ধ হয়ে বাস করে। মৃত কোরালের দেহ স্তূপাকারে জমা হয়ে নানা আকৃতির কাঠামো তৈরি করে। আমরা যাকে বলি ‘কোরাল রিফ' বা প্রবাল দ্বীপ। অবশ্য কোরাল রিফ গঠন নির্ভর করে সাগরতলের পরিবেশের ওপর। বিশেষ করে তাপমাত্রা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবের উপস্থিতিই জানান দেয় যে সেখানে এই ‘সাগর রত্ন' আদৌ তৈরি হবে কিনা।

কোরাল নিয়ে গবেষণা করছেন জার্মান গবেষক প্রফেসার মিশায়েল শুলৎস। তিনি বলেন, কোরাল কার্বোনেট অফ লাইম দিয়ে তৈরি। এছাড়া অন্যান্য প্রাণীর অংশ, এমনকি শৈবালও দেখা যায় কোরালে।

প্রফেসার শুলৎস জানান, কোরাল রিফ মৃত কোরালের একটি আকৃতি। যা সাধারণত গঠিত হয় ট্রপিক্যাল সাগরে। ২২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা কোরাল রিফ গঠনে সবচেয়ে সহায়ক। যেহেতু অগভীর অঞ্চলেই এ তাপমাত্রা বজায় থাকে, সেহেতু ১১ মিটার থেকে ৪০ মিটার গভীর সমুদ্রে কোরাল রিফ'এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। সাগরের পানিতে এমন তাপমাত্রা থাকলে প্রচুর ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন জন্মায়। ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন হচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ। ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন খেয়ে জুপ্ল্যাঙ্কটন নামের এক ধরণের অতি ক্ষুদ্র প্রাণী বেঁচে থাকে। আর কোরালের প্রধান খাদ্যই হচ্ছে জুপ্ল্যাঙ্কটন।'

কোরাল রিফ গঠনে সমুদ্রে দ্রবীভূত অক্সিজেনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কারণ, প্রবাল দ্বীপ সাধারণত বেশি গভীরতায় তৈরি হয় না। প্রফেসার মিশায়েল শুলৎস জানান, সাগরের গভীরতা বৃদ্ধি পেলে আলোর স্থায়িত্ব কমে যায়। তার ফলে মারা যায় সাগরতলের সবচেয়ে সুন্দর, মনমুগ্ধকর এই জীব।

বলা বাহুল্য, সাগরের সৌন্দর্যের জন্য কোরালের ভূমিকা অপরিসীম। অথচ জলবায়ু পরিবর্তন এবং দূষণের কারণে ধীরে ধীরে এই ‘সাগর রত্ন' হারিয়ে যাচ্ছে সমুদ্রের বুক থেকে।

বাংলাদেশেও একটি প্রবাল দ্বীপ আছে; যার নাম সেন্ট মার্টিন। এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমার-এর উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে। প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে স্থানীয়ভাবে একে নারিকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়ে থাকে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পিআর

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়